নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে প্রস্তুত ইউরোপের সাত দেশ
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবিক অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাত সদস্য। এই সদস্যরাষ্ট্রগুলো হলো নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, সুইডেন, বেলজিয়াম ও নরওয়ে। খবর: আল জাজিরা।
গত মে মাসে নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ, হামাসের তৎকালীন প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও গাজার হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন আইসিসির কৌঁসুলি করিম খান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত। হানিয়া ও সিনওয়ার এরই মধ্যে নিহত হওয়ায় তাদের এ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। আইসিসির এই পরোয়ানা জারি পশ্চিমা বিশ্বে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি রাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা আদালতের পরোয়ানা মেনে নিয়ে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রস্তুত। অনেকে আবার নেতানিয়াহুর প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন।
পরোয়ানা জারির পর ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রসেত্তো এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি মনে করি, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের সঙ্গে হামাসের সামরিক শাখার প্রধানকে এক লেভেলে বিচার করা আইসিসির একটি ভুল। তবে এই পরোয়ানা প্রত্যাহার কিংবা অকার্যকর হওয়ার আগে নেতানিয়াহু কিংবা গ্যালান্ত যদি ইতালি সফরে আসেন, তাহলে বাধ্য হয়েই তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে আমাদের। এটা কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। ইতালি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠন-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। তাই আইসিসির যে কোনো পদক্ষেপ, যে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে বাধ্য।
নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, সরকার আইসিসির নির্দেশ মেনে চলা এবং যাদের ওপর পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমন যাবতীয় যোগযোগ বন্ধ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্তোফি লেমোনি আইসিসির এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ‘জটিল আইনি ইস্যু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে নেতানিয়াহু ফ্রান্স সফরে এলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না, সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
এদিকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর আরবান আইসিসির এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তিনি শিগগির ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে হাঙ্গেরি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।
0 Comments