চিন্ময়ের জামিন শুনানি পিছিয়ে ২ জানুয়ারি
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও চিন্ময় দাশের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত হননি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন বলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এডিসি মফিজুর রহমান জানিয়েছেন।
জামিন শুনানির তারিখ উপলক্ষে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় এদিন ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আদালত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। তবে চিন্ময় দাশকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়নি। সকাল থেকেই আইনজীবী সমিতির নেতা ও সাধারণ আইনজীবীদের একটি অংশ আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করেন।
এর আগে ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাশের জামিন আবেদন নাকচ করে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই আদেশের পর প্রিজন ভ্যান ঘিরে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন বিক্ষোভ শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে এবং চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা এ সময় আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এর পরপরই আইনজীবী ও কর্মচারীরা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে। এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যেই রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন।
জামিন নাকচের পর চিন্ময়ের আইনজীবীরা সেই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করেন, তবে সেদিন কোনো শুনানি হয়নি।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আট দফা দাবি উত্থাপন করে সনাতনী সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনা হয়।
চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের পর সারা দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে তিনটি মামলা করে পুলিশ। এছাড়া, আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় তার বাবা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ, যাদের বেশিরভাগ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্ময় দাশের বিরুদ্ধে সব মামলায় তাকে আসামি করার দাবি জানান। সমিতির পক্ষ থেকে এসব মামলায় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট অভিযোগ করেছে, চিন্ময়ের জামিন শুনানি বিলম্বিত করতে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু আইনজীবীদের মামলায় আসামি করা হয়েছে।
0 Comments